১৫ নভেম্বর ২০২৫, শনিবার জলবায়ু সংকটের বিরুদ্ধে ন্যায়ভিত্তিক, সমন্বিত ও জরুরি পদক্ষেপের দাবিতে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) ও ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ “জলবায়ু ন্যায়বিচারের জন্য বিশ্বব্যাপী কর্ম দিবস” উদযাপন করেছে।  ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) ও ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এর যৌথ আয়োজনে COP30 চলাকালীন ঢাকাসহ বাংলাদেশের ১৩টি জলবায়ু-প্রভাবিত স্থানে মানববন্ধন, সাইকেল র‍্যালি, নৌ র‌্যালী ও সচেতনতা কর্মসূচি পালন করা হয় । যার উদ্দেশ্য ছিল ভূমি, জল, ম্যানগ্রোভ, নদী, সমুদ্র, বন বিষয়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কণ্ঠস্বর বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরা এবং জলবায়ু ন্যায়বিচারের দাবিকে সুদৃঢ় করা।

আমরা এমন এক যুগে বাস করছি যেখানে বৈষম্য, কর্পোরেট আধিপত্য, সামরিক দমন-পীড়ন ও পরিবেশধ্বংস একসাথে মানুষের ওপর বহুমুখী সংকট তৈরি করেছে। এই সংকটের আবহে জলবায়ু বিপর্যয়ের সবচেয়ে তীব্র প্রভাব পড়ছে কৃষ্ণাঙ্গ, আদিবাসী, নারী, শ্রমজীবী ও নদী-উপকূলনির্ভর জনগোষ্ঠীর ওপর। ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) ও ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ বিশ্বাস করে যে- এই সংকটের বাস্তব সমাধান জানেন সেই মানুষেরা, যারা প্রতিদিন ভূমি, জল, বন ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য লড়াই করছেন।

এই বাস্তবতাকে সামনে রেখে নিম্নলিখিত কর্মকাণ্ড অনুষ্ঠিত হয়:

  • মংলা: কানাইনগর পশুর নদীর পাড়ে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি।
  • বরগুনা সদর: মসজিদ মার্কেট চত্বর থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পৌর মার্কেট চত্বর পর্যন্ত সাইকেল র‍্যালি।
  • তালতলী: নিদ্রার চরে মানববন্ধন।
  • পাথরঘাটা: বলেশ্বর নদীতে নৌ র‍্যালি ও মানববন্ধন।
  • কলাপাড়া: আন্ধারমানিক নদীর তীরে হ্যালিপ্যাড মাঠে মানববন্ধন ও কলাপাড়া শহরে সাইকেল র‍্যালি।
  • পেকুয়া: বানৌজা সাবমেরিন নৌ-ঘাঁটি সড়কে পদযাত্রা ও সাইকেল র‍্যালি।
  • কুতুবদিয়া: কুতুবদিয়া মহিলা ডিগ্রি কলেজের সামনে থেকে শুরু করে উপজেলা গেট পর্যন্ত সাইকেল র‍্যালি ও পথসভা।
  • কক্সবাজারঃ বাকখালি নদীর তীরে মানবন্ধন।
  • পাবনাঃ চাটমোহরের ফৈলজানা বাজারে সাইকেল র‍্যালী ও মানববন্ধন।
  • জামালপুরঃ ফুলবাড়ীয়া এলাকায় পিটিআই গেইটের সামনে মানববন্ধন।
  • সিলেট: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) এর শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে সমাবেশ।
  • হবিগঞ্জ: টাউন হল প্রাঙ্গণে নাগরিকবন্ধন।
  • ঢাকা: প্রেসক্লাবে র‍্যালি ও মানববন্ধন।

প্রতিটি স্থানে ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, মূল স্লোগান এবং সচেতনতামূলক বার্তার মাধ্যমে জলবায়ু ন্যায়বিচারের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। আয়োজকরা বলছেন, “জলবায়ু পরিবর্তন কেবল পরিবেশগত সমস্যা নয় – এটি মানবিক মর্যাদা ও জীবিকার সঙ্গে যুক্ত একটি ন্যায্যতার-বিষয়। কর্পোরেট দায়মুক্তি, সমৃদ্ধ দেশগুলোর ইতিহাসগত জ্বালানি ব্যবহার ও আধুনিক সাম্রাজ্যবাদের নীতি বদল না করলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বাঁচার অধিকার রক্ষা হবে না।”

আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, নীতিনির্ধারক, কর্পোরেট সেক্টর এবং নাগরিক সমাজকে আহ্বান জানাই- জলবায়ু ন্যায্যতা কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কণ্ঠস্বরকে কেন্দ্র করে কার্যকর, দায়িত্বশীল ও দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। স্থানীয় পর্যায় থেকে বৈশ্বিক স্তর পর্যন্ত শোষণকারী নীতির পরিবর্তন এবং ক্ষতিপূরণ-ভিত্তিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত না হলে প্রকৃত সংকট মোকাবিলা সম্ভব নয়।

Please follow and like us: