১১ মার্চ ২০২৪, চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি ইউনিয়নের চুনতি ফরেস্ট অফিস সংলগ্ন আরাকান সড়কে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সামাজিক সচেতনতা, পাহাড়কাটা, গাছকাটা এবং জীববৈচিত্র্য বিনষ্টকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) ও চুনতি রক্ষায় আমরা এর যৌথ আয়োজনে একটি “মানববন্ধন” অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে লোহাগাড়া উপজেলার প্রায় শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন। মানবন্ধনে সভাপতিত্ব করেন চুনতি রক্ষায় আমরা এর  সমন্বয়ক সানজিদা রহমান। ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) এর সদস্য সচিব শরীফ জামিল, ধরা’র কক্সবাজার শাখার আহ্বায়ক ফজলুল কাদের চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আবদুল মাবুদ, ধরা’র সদস্য আবদুল করিম কিম, ফজলে এলাহী, মাসুদ হোসেন সিদ্দিকী, ইকবাল ফারুকসহ স্থানীয় ও জাতীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শরীফ জামিল বলেন, বাংলাদেশের অন্যতম বিরল ও সমৃদ্ধ বন্যপ্রানীর অভয়ারণ্য এই বন এশীয়-হাতিদের আবাসস্থল । চুনতি অভয়ারণ্যের মধ্য দিয়ে রেললাইন নির্মাণ করা হয়েছে, এ বনের ৫ কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে বাকখালী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং ২০ কিলোমিটারের মধ্যে মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। যা চুনতি রক্ষায় সরকারের চরম অবহেলা প্রকাশ পায়। যার ফলে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সাথে বন বিভাগ এবং স্থানীয় প্রশাসন চুনতিকে ব্যক্তিগত বা গোষ্ঠী স্বার্থে ব্যবহার করতে সাহস পেয়েছে। চুনতীর মানুষ এখন অভয়ারণ্য বাঁচাতে এগিয়ে এসেছে। আমাদের অবশ্যই সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষকে স্বচ্ছ তদন্ত ও শাস্তির আওতায় আনতে হবে।”

বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আব্দুল মাবুদ বলেন, মানুষ খুন করলে মামলা হয়। পাহাড় খুন করলে মামলা হয়না। কিন্তু সরকারী কর্মকর্তা পয়সা খেয়ে চলে যায়। আজকে সাংবাদিক, নারী, ছাত্ররা, স্থানীয়রা বয়স্করা আমাদের সাথে আছেন। আমরা চাই বন ধ্বংসের ব্যাপারে আমরা সকলে সচেতন হই। তিনি স্থানীয় জনগণকে চুনতি অপব্যবহারকারীদের তালিকা তৈরি করতে এবং পাহাড় কাটা ও গাছ কাটা দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে আনন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।

ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) এর আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবদুল করিম কিম বলেন- পাহাড় কাটা ও বন উজার এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করে যাচ্ছি। কোথাও যখন পাহাড় কাটা হয় তখন মানুষ আমাদেরকে জানায়। আমরা প্রশাসনকে জানাই, সংবাদ মাধ্যমকে জানাই। কিন্তু যে পাহাড় কাটে তার সাথে পরিবেশ অধিদপ্তরের টাকা পয়সার লেনদেন হয়। সরকারি কর্মকর্তারা টাকা পয়সা নিয়ে নিরব হয়ে যায়। ঢাকা থেকে এসে কেউ এই বন রক্ষা করতে পারবে না। এই অভয়ারণ্য রক্ষায় জনগনকে এগিয়ে আসতে হবে। চুনতির বন ধ্বংসের জন্য বনরক্ষার কর্মকর্তারাই দায়ি। টাকা খেয়ে বনে পাহারা দেয় আবার মামলাও দেয়।  নিজেদের রক্ষার স্বার্থে পাহাড় কাটা দেখলেই রুখে দাড়ানবেন, বন্ধ করবেন।

সানজিদা রহমান উপস্থিত সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে এই মানববন্ধন সমাপ্ত করেন।

News Links:  Dhakatribune, Cnnbangla24