কক্সবাজারের পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক নাগরিক সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)’র উদ্যোগে লবণ, পান, মৎস্য ও পর্যটন শিল্প রক্ষায় কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ সকল অপরিকল্পিত ও দূষণ সৃষ্টিকারী শিল্পায়ন বন্ধের দাবিতে কক্সবাজারের পেকুয়া কবির আহমেদ বাজার ওয়াপদা চত্বরে এক জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) বিকাল ৩টায় পেকুয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল হাশেমের সভাপতিত্বে এবং পরিবেশ কর্মী দেলওয়ার হোসাইন ও জালাল উদ্দীনের সঞ্চালনায় অনুষ্টিত জনসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)-এর কেন্দ্রিয় সদস্য সচিব শরীফ জামিল।

এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, ধরা- কক্সবাজারের আহ্বায়ক ও কেন্দ্রিয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ফজলুল কাদের চৌধুরী; চুনতি রক্ষায় আমরা এর আহবায়ক সানজিদা রহমান, ধরা- কক্সবাজারের সদস্য সচিব সাংবাদিক ফরিদুল আলম শাহীন, পেকুয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আজিজুল হক।

বক্তব্য রাখেন চট্রগ্রাম ইয়ুথ ফাউন্ডেশনের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন আজাদ, সমাজকর্মী এম আজম উদ্দিন, ইয়াছিন আরাফাত, হারুণর রশিদ, ওসমান, আতাউল ইসলাম, জামাল উদ্দিন, লবণচাষী আবদুল হালিম, লবণচাষি শফিউল আলম, মাওলানা রুহুল কাদের ও নাজেম, নাজেম উদ্দিন প্রমুখ। পেকুয়ার সমাজসেবী ইকবাল হোসাইন প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শরীফ জামিল বলেন, কক্সবাজার জেলা শুধু বাংলাদেশ নয় সারাবিশ্বের জন্য পরিচিত ও গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং এ জনপদের মানুষের জীবন-মান উন্নয়নে সরকারকে গুরুত্ব দিতে হবে এবং বিশেষ করে এ অঞ্চলের লবণ চাষিদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে হবে এবং লবণের ন্যায্যমূল্য কমপক্ষে পাঁচশত টাকা করতে হবে। অন্যথায় কক্সবাজারের লবণচাষিদের সাথে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

তিনি আরো বলেন, কক্সবাজার ও আশপাশের লবণ ও লবণ চাষীদের বাঁচাতে কয়লা কারখানাসহ পরিবেশ দূষণকারী শিল্প কারখানা বন্ধ করুন। লবণ শিল্পজাত পণ্য নয়, অবিলম্বে একে কৃষি পণ্য হিসাবে ঘোষণা করুন। এটা ধান ও তরকারির দেশ; তাই লবণ বাংলাদেশের জন্য একটি প্রধান খাদ্য এবং কৌশলগত পণ্য। দয়া করে এটি আমদানি করবেন না।
চুনতি রক্ষায় আমরা আন্দোলনের আহ্বায়ক সানজিদা রহমান বলেন কক্সবাজার জেলার পর্যটন রক্ষার নামে শত শত পাহাড়ের বুক চিড়ে ৭ লক্ষ গাছ কেটে যে উন্নয়নের নামে রেললাইন করা হয়েছে তা আমাদের এখন গলার কাটা। তারা রেললাইন দিয়ে আমাদের বণ্য প্রাণী ধ্বংস ও সাধারণ মানুষকে বন্যার পানিতে ভাসিয়ে মারার মরণ ফাঁদ তৈরি করছে, আমরা এমন উন্নয়ন চাই না, যে উন্নয়নে আমাদের প্রাণ প্রকৃতি রক্ষা পায় তেমন উন্নয়ন চাই।

উজানটিয়া ইউনিয়নের দীর্ঘদিন জনগণের ন্যায্য অধিকার নিয়ে কাজ করা লবণ চাষিদের প্রতিনিধি এম. আজম উদ্দীন বলেন আমার ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষ লবণ চাষী তাদের অধিকার বলতে কিছু নাই, তারা আজ দিশেহারা লবণের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় তাদের পক্ষে কথা বলার কোন মানুষ নেই। আমরা অধিকার আদায়ের জন্য দরকার হলে এই আন্দোলন আরও বেগবান করব।

ইয়ুথ এ্যাকশন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান সাংবাদিক মুসলিম আজাদ বলেন, লবণ চাষিরা জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাদের সন্তানেরা আজ শিক্ষা বঞ্চিত, নানা রোগে ভুগলেও যথাযথ চিকিৎসা করাতে তারা ব্যর্থ। লবণ চাষীদেরকে খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করতে হয়। সরকারের কাছে তাদের ন্যায্য এবং মৌলিক দাবি লবণের ন্যায্যা মূল্য নির্ধারণ করে সকল লবণচাষিদের সরকারি ভাবে তালিকাভূক্ত করে প্রণোদনার আওতায় নিয়ে আসা হউক।

এছাড়া জনসমাবেশে মহেশখালীর পরিবেশ সংগঠক সাংবাদিক আবু বক্কর, সাংবাদিক আলা উদ্দিন আলোসহ, পেকুয়ার কর্মরত সাংবাদিক এবং পেকুয়া, কুতুবদিয়া, মহেশখালী-মাতারবাড়ি এলাকার নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয় ভুক্তভোগী জনগণ এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।

News Link:

  1. Aponbanglanews
  2. ProtidinerBangladesh
  3. Facebook Video
  4. Facebook Video 2
  5. NTVial