বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের বলেছেন, পর্যটন শিল্প অপরাপর শিল্পের সাথে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে আছে। হবিগঞ্জ জেলা পর্যটন শিল্পেরক্ষেত্রে অপার সম্ভাবনাময়। কিন্তু এখানে পর্যটকদের নিরাপত্তা সমস্যাটা বড় সমস্যা। তাই আমি হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসককে পরামর্শ দেব এখানে টুরিস্ট পুলিশিং এর ইউনিট খোলার জন্য যথাযথ দপ্তরে চিঠি দেওয়ার জন্য। এছাড়া হবিগঞ্জের রেমা- কালেঙ্গা, সাতছড়ি, লক্ষীবাউর, সাগরদিঘী ও পুরাতন খোয়াই নদীর কথা আলোচনায় এসেছে। আমরা সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করব এইসব স্পটে পর্যটনের সুযোগ-সুবিধা উন্নত করার।হবিগঞ্জের প্রধান প্রধান পর্যটন কেন্দ্রের উন্নয়নে প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে।
২২ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল দশটায় জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে ” হবিগঞ্জের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সংরক্ষণ ও টেকসই পর্যটন বিকাশে করণীয়” শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতার তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, জেলা প্রশাসন হবিগঞ্জ, ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার – এর যৌথ আয়োজনে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক ড. মো: ফরিদুর রহমানের  সভাপতিত্বে ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক। কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ টুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন, হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি) রেজাউল হক খান, টুরিস্ট পুলিশ সিলেটের পুলিশ সুপার মো: বিল্লাল হোসেন, বৃন্দাবন সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ ছগীর, বাপা হবিগঞ্জের সভাপতি  অধ্যাপক মো: ইকরামুল ওয়াদুদ, ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আব্দুল করিম কিম ও বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম।
আলোচনায় অংশ নেন হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: শহীদুল হক মুন্সী, সহকারী বন সংরক্ষক সিলেট বিভাগ এর তারেক রহমান, হবিগঞ্জ মটর মালিক গ্রুপ এর সভাপতি ফজলুর রহমান, হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এডভোকেট মনসুর উদ্দিন আহমেদ ইকবাল, হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ আলফাজ উদ্দিন, ধর্মঘট কলেজের অধ্যক্ষ আলী আজগর,প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শোয়েব চৌধুরী, প্রথম আলো এর নিজস্ব প্রতিবেদক হাফিজুর রহমান নিয়ন, পরিবেশ সংগঠক তাহমিনা বেগম গিনি, মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী মমিন, হবিগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা জাবেদ ইকবাল, চন্ডিচড়া চা বাগানের ব্যবস্থাপক সেলিমুর রহমান, কৃষিবিদ বীরেন্দ্র লাল দাস, সাদিয়া আক্তার, ওসমান গনি রুমি, খাদিজা সামিরা, শাকের আহমেদ, সাংবাদিক আব্দুল হালিম, তারুণ্য সোসাইটির সভাপতি আবিদুর রহমান রাকিব, ফরিদ আহমেদ, মুজাহেদ আহমেদ রিজ, মো: রায়হান প্রমুখ।
মূল প্রবন্ধে ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক হবিগঞ্জের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সংরক্ষণ ও  পর্যটন বিকাশে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, পর্যটক আকর্ষনে হবিগঞ্জের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ধর্মীয়, আধ্যাত্মিক, প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনাসমূহ নিয়ে দেশ-বিদেশে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে। পাশাপাশি প্রতিটি পর্যটনকেন্দ্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার সংস্থান ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার নিশ্চিত করতে হবে এবং পর্যটন শিল্পের বিকাশের সাথে সাথে বিশেষত ইকো ট্যুরিজম ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নির্ভর পর্যটনকেন্দ্র সমূহের পরিবেশ ও প্রতিবেশ সংরক্ষণে গুরুত্ব দিতে হবে।
হবিগঞ্জের পর্যটন সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসাইন বলেন,  অচিরেই হবিগঞ্জে চালু হচ্ছে টুরিস্ট পুলিশ। শুধুমাত্র নিরাপত্তা নয়, পর্যটন সংক্রান্ত যেকোন অপরাধ তদন্তে কাজ করবে টুরিস্ট পুলিশ। হবিগঞ্জের পর্যটনের ক্ষেত্রে সার্বিক উন্নয়নে টুরিস্ট পুলিশ ভূমিকা রাখবে।
বিশেষ অথিতির বক্তৃতায় আব্দুল করিম কিম বলেন, হবিগঞ্জকে পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে পর্যটকদের সুযোগ সুবিধা বাড়াতে হবে। এই শহরকে যানজট ও দূষণমুক্ত করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, হবিগঞ্জের পর্যটনের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ট্যুরিজম বোর্ড, প্রশাসন ও নাগরিকদের একযোগে কাজ করতে হবে। আমাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে সংরক্ষণ ও পর্যটনকে এগিয়ে নেওয়ার।
কর্মশালায় হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, জেকে এন্ড এইচকে হাই স্কুল, বাডস কেজি এন্ড হাই স্কুল এর প্ল্যানেটিয়ার্স ক্লাব হবিগঞ্জ, বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুল, বিডি ক্লিন, ভলেন্টিয়ার ফর বাংলাদেশ, হবিগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের বিএনসিসি টিমসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজন অংশগ্রহণ করেন।