চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি ইউনিয়নের পরিবেশ ও অভয়ারণ্যের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে লোহাগাড়া উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে চুনতি রক্ষায় আমরা, ধরা এর উদ্যোগে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
পরিবেশকর্মী জাওয়াদের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন চুনতি রক্ষায় আমরা এর সমন্বয়ক সানজিদা রহমান, অবিভক্ত সাতকানিয়ায় স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলনকারী লন্ডন প্রবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আবদুল মাবুদ, চুনতি রক্ষায় আমরা এর সহ-সমন্বয়ক এহতেশামুল হক রোমেল, মহিলা ইউপি সদস্য নাসিমা আক্তার, পরিবেশকর্মী রাহিক, শামীম আহসানসহ আরো অনেকে। মানববন্ধনে সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, অভয়ারণ্যের মাঝখান দিয়ে রেললাইন নির্মান করে উন্নয়নের নামে চুনতির পরিবেশ ও অভয়ারণ্যের জীববৈচিত্র্য স্যাবোটাজ ঘটিয়ে ধংস করা হয়েছে। পাহাড় কাটা, গাছ কাটা, বালু উত্তোলন, অভয়ারণ্য দখল করে বাড়ি নির্মাণসহ নানাবিধ আক্রমণে বন বিলুপ্তির পথে, চরম হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য। বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে হাতি, হরিণ, বানরসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী। গত কয়েক বছরে ব্যাপকভাবে ধ্বংস হয়েছে বন্যপ্রাণীদের আবাসস্থল। ফলে দিশেহারা প্রাণিকূল লোকালয়ে ঢুকে বেঘোরে মরছে।
অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা ইটভাটা, পাহাড় ও ধানি জমির টপসয়েল নিধন, বন উজাড় করে গাছপালাসহ মূল্যবান উদ্ভিদ পাচার এখানকার প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের জন্য বহুলাংশে দায়ী।
বিধ্বংসী এসব কর্মকাণ্ড বন্ধ না হলে প্রকৃতির ভয়ংকর প্রতিশোধের শিকার হবে আগামী প্রজন্ম। এ করুণ পরিণতি দেখতে হয়তো বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না আমাদের। নিকট অতীতে পার্বত্য অঞ্চলে পাহাড় ধসে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ব্যাপকতা বারবার দেখলেও বোধোদয় নেই মানুষের। এ অপরিণামদর্শিতার মাশুল গুনতে হবে অতীতের চেয়ে বহুগুণ বেশি। সুদূরপ্রসারী নেতিবাচক প্রভাব ভয়ংকর মানবিক বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাবে আমাদের।
বন, পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে বনজ সম্পদ ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস, মানব বসতি, ইটভাটা, সংরক্ষিত এলাকার ভেতরে বাণিজ্যিক কার্যক্রম, পাহাড় কাটা ও বন্যপ্রাণী শিকারসহ সকল অপতৎপরতা পরিকল্পিত ভাবে সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দিতে হবে তাহলেই এর সুফল মিলবে।