জলবায়ু উষ্ণতায় বাঘ ও সুন্দরবনের অস্তিত্ব হুমকিতে। সুন্দরবন ভালো না থাকলে বাঘও ভালো থাকবেনা। সুন্দরবনের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় বাঘের ভূমিকা সর্বাধিক। সুন্দরবন এবং তার প্রধান অলংকার বাঘকে রক্ষা করা আমাদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। সুন্দরবনের সন্নিকটে অপরিকল্পিত শিল্পায়ন এবং খালে বিষ প্রয়োগের ফলে বাঘসহ সুন্দরবনের জীববৈচিত্র ধ্বংস হচ্ছে। বাঙালির শৌর্য-বীর্যের প্রতীক, প্রাকৃতিক ঐতিহ্যের স্মারক বাঘকে আমরা কোনভাবেই বিলুপ্ত হতে দিতে পারিনা। ২৯ জুলাই সোমবার সকালে সুন্দরবন সংলগ্ন মোংলার কাইনমারিতে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), পশুর রিভার ওয়ারটারকিপার এবং ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ আয়োজিত বিশ্ব বাঘ দিবস উপলক্ষে বনজীবী সমাবেশে বক্তারা একথা বলেন।
সোমবার সকাল ১০টায় বাঘ দিবসের বনজীবী সমাবেশ ও মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সুন্দরবনের জেলে সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ’র সদস্য আব্দুর রশিদ হা্ওলাদার। সমাবেশ ও মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সুন্দরবন রক্ষায় আমরা এর সমন্বয়ক এবং পশুর রিভার ওয়াটারকিপার মোঃ নূর আলম শেখ। এসময়ে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সুন্দরবনের বনজীবী মোঃ জাহিদ ব্যাপারী, মোঃ শাহাদত ব্যাপারী, পশুর রিভার ওয়াটারকিপার ভলান্টিয়ার হেনা বেগম, জোৎস্না বেগম প্রমূখ। বাঘ দিবসের সমাবেশ ও মানববন্ধনে বক্তারা আরো বলেন, ১৯৩০ দশকে পূর্ব বাংলার ( বর্তমান বাংলাদেশ এলাকার ) ১৭ জেলার মধ্যে ১১ জেলাতেই বুনো বাঘ ছিলো। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামের অল্প কিছু সংখ্যক বাঘের কথা বাদ দিলে বলা চলে শুধু সুন্দরবনেই বুনো বাঘ টিকে আছে।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সুন্দরবন রক্ষায় আমরা এর সমন্বয়ক এবং পশুর রিভার ওয়াটারকিপার মোঃ নূর আলম শেখ বলেন, বন্যপ্রাণী আইন অনুযায়ি বাঘসহ সুন্দরবনের সব প্রাণী রক্ষিত। এই আইন এবং আন্তর্জাতিক চুক্তি সাইটিস এর আওতায় বাাঘ শিকার এবং এর অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ব্যবহার, বিপণন ও রপ্তানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এরপরে সুন্দরবনে বাঘ শিকার ও পাচারে আন্তর্জাতিক চোরাচালান চক্র সক্রিয় আছে।
সভাপতির বক্তব্যে জেলে সমিতির নেতা আব্দুর রশিদ হাওলাাদার বলেন বাঘ রক্ষায় বন বিভাগের ঘন ঘন টহল এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির ফলে চোরা শিকার কমিয়ে আনা সম্ভব। এছাড়া বাঘের বৈজ্ঞানিক গবেষণা, মনিটরিং এবং বাঘ-মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসনের কার্যক্রম জোরদার করতে হবে।